বাঘের গায়ে দাগ কি করে হল (বর্মা দেশের রূপকথা)

 

বাঘের গায়ে দাগ কি করে হল (বর্মা দেশের রূপকথা)


কোন এক সময়ে এক জঙ্গলে এক বিরাট বাঘ থাকত। আর তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছিল এক খরগোস। তখন কিন্তু বাঘের গায়ে ডোরাকাটা দাগ থাকত না। সুন্দর একেবারে সোনার রঙ ঝলমল করেছে। এদিকে খরগোস ভায়া ছিল ভীষন দুষ্টু। সবার সাথে ইয়ার্কি মারে। একে ক্ষেপায়, ওকে ক্ষেপায়, মানে একেবারে দুষ্টুর শিরোমণি। আর তাই এই খরগোসের কোন বন্ধু ছিল না। সবাই তাঁকে এড়িয়ে চলে। একা এই বাঘই তাঁকে বন্ধু হিসাবে মেনে নিয়েছিল। তাও যখন দেখে যে বেচারী খরগোসের কোন বন্ধু নেই। আর এমনিতে ভোলাভালা বাঘ, তার পেছনে তাঁকে নিয়ে কেউ মস্করা করছে কিনা, তার খেয়াল রাখত না। এমন সময় একদিন খরগোস এল বাঘের সাথে দেখা করতে। কি ব্যপার? খরগোস বাঘকে বলে, “বন্ধু, কাল আমাকে তুমি একটু সাহায্য করতে পারবে? বর্ষাকাল তো এসেই গেল, আমার ঘরের ছাতটাকে নতুন করে ছাইতে হবে। তাই কিছু খড়ের দরকার। তুমি আমাকে সাহায্য করলে, খড় কাটার পুরো কাজটা একদিনেই হয়ে যাবে”। বাঘ ভায়ার খেয়াল নেই যে খরগোস থাকে তো গর্তে। তার কোন ঘর বানানর কিসের দরকার? সে খুসী মনে বলে দিল, “ঠিক আছে, আমি তোমার সাথে কাজে যাব”। খরগোস বলে, “আমাদের ঐ বড় জঙ্গল পেরিয়ে যেতে হবে, অনেকটা পথ। সক্কাল সক্কাল বেড়িয়ে পরব। সাথে খাবার নিত ভুল করো না যেন”। পরের দিন সক্কাল বেলায় দুজনে রওয়ানা হয়ে গেল। খরগোস চড়ল বাঘের পিঠে। আর হাল্কা হবার জন্য বাঘ বুঝতেও পারল না যে খরগোস তার পিঠে বসে আছে। খরগোসের কাছে দুটো খাবারের প্যাকেট। একটাতে খরগোসের আনা একটা প্যাকেট যাতে আছে কিছুটা গোবর আর বালি মেশান। আর ওদিকে বাঘ ভায়া দুজনের পছন্দ মতন ভাল খাবারই এনেছে। জায়গা মতন পৌছনোর পরে বাঘ তো কাজে নেমে পড়ল। এদিকে খরগোস বললে , সে খুব ক্লান্ত হয়ে গেছে তাই একটু বিশ্রাম না নিয়ে কাজে লাগতে পারছে না। বাঘ ভায়ার কিন্তু খেয়াল এল না যে খরগোস সারাক্ষণ তার পিঠেই চড়ে এসেছে, তাই তার ক্লান্ত হবার কোন সম্ভাবনা নেই। যতক্ষণ বাঘ ভায়া তার কাজ শেষ করছে ততক্ষনে খরগোস বাঘের আনা খাবারটা খেয়ে নিয়ে খালি ঐ গোবর আর বালি মেশান প্যাকেটটা রেখে দিল। বাঘ ভায়া কাজ সেরে এসে খেতে বসলে, খরগোস বলে, “পুরাকালে জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলে গেছেন যে যারা ঠিক সময়ে খেতে আসেনা তাঁদের খাবার বালি আর গোবর মেশান হয়ে যায়”। বাঘ তার খাবার খেতে পারল না কিন্তু ভাবতে লাগল সত্যি পুরাকালে লোকেরা কত কি জানত। সন্ধ্যের মধ্যে বাঘ ভায়া দুটো বিরাট বড় খড়ের আঠি কেটে তৈরী করে নিল, যাতে দুটোকে নিয়ে যাওয়া যায়। তার পরে দুটো আটিই বাঘ তার ঘাড়ে তুলে ফেরার জন্য হাঁটা দিল। খরগোসকে অত বড় আটির নীচে দেখা যাচ্ছিল না বলে সে কখন বেরিয়ে এসে কিছু না নিয়েই রওয়ানা হল। রাস্তায় খরগোস হঠাত ফস করে দেশলাই জ্বেলে নিতে বাঘ ভায়া জিজ্ঞেস করে কিসের আওয়াজ হল খরগোস ভায়া।। খরগোস বলে আমার খুব ঠান্ডা লাগছে মনে হচ্ছে সারাদিন রোদে থেকে জ্বর এসেছে। এই বলে সে একটা আঁটিতে আগুন লাগিয়ে নিয়ে লাফ মেরে জঙ্গলের ভেতরে লুকিয়ে পড়ল। বাঘ ভাবে খরগোসের নিশ্চয় খুব জ্বর এসেছে তাই তার ঠান্ডা লাগছে, কিন্তু আমার তো বেশ গরম লাগছে। ইতিমধ্যে তার পিঠে যে আঁটীটা ছিল সেটার আগুনের তাপ তার গায়ের চামড়াতে এসে পৌছলে, সে দেখে তার গায়ের চামড়াতে দাগড়া দাগড়া হয়ে পুড়ে দাগ হয়ে গেছে। সে চিৎকার করে আঁটীটা ফেলে দিয়ে লাফাতে শুরু করে দিল। ঠিক তখনই খরগোস এসে তার সামনে দাড়ালে, বাঘ খুব রেগেমেগে জিজ্ঞেস করে, আমার পিঠের আঁটিটাতে কেন তুমি আগুন লাগালে। খরগোস বলে, “আমি কোথায় আগুন লাগালাম। আমি তোমাকে এই প্রথম দেখছি”। বাঘ বলে, “সকালে আমরা এক সাথে এসেছিলাম, আর তুমি বলছ আমাকে এর আগে দেখইনি”। খরগোস বলে, “আরে ওতো আমার পিসিমার ননদের বৌদির ভাইপো হবে। দেখতে আমাদের প্রায় এক রকমের”। বাঘ আর কি করে। কাছের নদীতে ডুবকী লাগিয়ে তার গায়ের জ্বলুনী থামাল। সেই থেকেই বাঘের গায়ে ডোরা কাটা দাগ হয়ে গেছে।

Comments

Online Income From Home

অনলাইন ইনকামের সম্পূর্ণ একটি গাইড লাইন। How to income from online?

ইন্টারনেট থেকে কিভাবে আয় করবো? ডহজ কিছু সমাধান।

Internet থেকে টাকা আয় করার ৫ টি নিশ্চিত উপায় (Online Taka Income) NEW

অনলাইনে ঘরে বসে ইনকাম করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন। How to make money online from home?